সিরিয়ার সশস্ত্র সংগঠন হায়াত তাহরির-আল-শাম (এইচটিএস) নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহীরা গেলো কয়েকদিনের সংঘাতের জেরে আলেপ্পো শহরের অধিকাংশ এলাকা দখল করে নিয়েছে। স্থানীয় সময় শনিবার আলেপ্পো বিমানবন্দর ও এর আশপাশের কয়েকটি শহরও দখলে নিয়েছে তারা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র দেশটিতে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে রাশিয়া।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ বলেছেন, দেশের উত্তরাঞ্চলে যে বিদ্রোহীরা বর্তমানে তাণ্ডব চালাচ্ছে, সন্ত্রাসী হামলা যত তীব্রই হোক না কেন তাদের পরাজিত করা হবে।
স্থানীয় সময় শনিবার আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদের সঙ্গে ফোনালাপে এসব কথা বলে আসাদ।
আসাদ বলেন, সব সন্ত্রাসীর মোকাবেলায় সিরিয়া তার স্থিতিশীলতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা করে যাচ্ছে।
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস অনুসারে, সাম্প্রতিক সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩২৭ জন নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই যোদ্ধা। তবে নিহতদের মধ্যে ৪৪ জন বেসামরিক নাগরিকও রয়েছেন।
ব্রিটেন ভিত্তিক যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থাটি আরও জানায়, হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) ও এর সহযোগী দলগুলো বড় ধরনের প্রতিরোধের মুখোমুখি না হয়েই শহরটির বেশিরভাগ এলাকা, সরকারি কেন্দ্র ও কারাগারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে।
শহর থেকে সরকারি বাহিনী প্রত্যাহার করার পর, তারা আলেপ্পো বিমানবন্দরও দখল করে এবং কোনো প্রতিরোধ ছাড়াই বেশ কয়েকটি কৌশলগত শহর নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয় বলেও দাবি সংস্থাটির।
অবজারভেটরি জানায়, বিদ্রোহীদের অগ্রগতির মুখে আলেপ্পোর প্রায় ১৪০ কিলোমিটার (৯০ মাইল) দক্ষিণে সিরিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম শহর হামা থেকেও সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করা হয়েছে।
তবে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের উদ্ধৃত একটি সামরিক সূত্র সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করার বিষয়টি অস্বীকার করে জোর দিয়ে বলেছে, সেনা ইউনিটগুলো এখনও বিদ্রোহীদের আগ্রাসনের মুখে তাদের অবস্থান ধরে রেখেছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির একজন ফটোগ্রাফার জানান, তিনি আলেপ্পোর শহরের ল্যান্ডমার্ক দুর্গের বাইরে বিদ্রোহী যোদ্ধাদের দেখেছেন।
বিদ্রোহীরা প্রায় দুই মিলিয়ন লোকের শহরের ‘বড় একটি অংশে’ প্রবেশ করেছে স্বীকার করে দেশটির সেনাবাহিনী বলছে, বিদ্রোহীদের হামলায় ‘আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর কয়েক ডজন লোক নিহত ও অন্যরা আহত হয়েছে।
এইচটিএস হলো আল-কায়েদার সাবেক সিরিয়া শাখার নেতৃত্বে একটি জিহাদি জোট, যারা তাদের মিত্রদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে উত্তর-পশ্চিমের ইদলিব অঞ্চলে একটি বিদ্রোহী ছিটমহল নিয়ন্ত্রণ করেছে।
অবজারভেটরির প্রধান রামি আবদেল রহমান বলেন, এই মুহূর্তে সিরিয়ার সরকারকে তার প্রধান মিত্র ইরান ও রাশিয়া পরিত্যাগ করেছে বলে মনে হচ্ছে। তবে মস্কো এখন পর্যন্ত প্রতীকী হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
রাশিয় দাবি করেছে, তাদের পরিচালিত বিমান হামলায় তিন শতাধিক বিদ্রোহী নিহত হয়েছে।
মন্তব্য করুন