একদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে ছড়িয়ে পড়া ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতে যখন বিশ্ব রাজনীতির মাঠ সরগরম তখনই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন যেন বিশ্ববাসীর উৎকণ্ঠা আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল। অবশেষে ভোট প্রাপ্তির দিক থেকে ২০১৬ সালের তুলনায় অধিকতর শক্তিশালী হয়ে ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বী কমালা হ্যারিসকে হারিয়ে আবারও নাটকীয়ভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতার মসনদ পেলেন ৭৮ বছর বয়সি ডোনাল্ড ট্রাম্প।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পুরো বিশ্বের চোখ স্থির ছিল একদিকেই। কে হচ্ছেন পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট যিনি পৃথিবীর অন্যতম ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের একজন। বাস্তবিক যার এক আঙ্গুলের ইশারায় বদলে যেতে পারে অনেক দেশের রাজনৈতিক চিত্র, বহু মানুষের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে বিশ্ববাসীর অপেক্ষার পালা শেষ হল গত ৬ নভেম্বর ২০২৪ । ডেমোক্র্যাটদের হারিয়ে বিশ্বমোড়ল খ্যাত আমেরিকার ৪৭ তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন রিপাবলিকান দলের ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ জয়ের মধ্য দিয়ে মাত্র চার বছর পর পুনরায় হোয়াইট হাউসে উত্থান হতে চলেছে আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। এমতাবস্থায় সবার মনে একটাই প্রশ্ন- কেমন হবে ট্রাম্প সরকারের পররাষ্ট্র নীতি? নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তি ফিরিয়ে আনতে তাঁর পরিকল্পনাসমুহ কি? ট্রাম্পের কাছ থেকে এমন প্রশ্নের উত্তর পেতেই যেন মুখিয়ে আছে বিশ্ববাসী।
বলাই বাহুল্য, এরইমধ্যে ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান ইসরাইলি বোমা হামলায় প্রাণ হারিয়েছে তেতাল্লিশ হাজার ফিলিস্তিনি। নতুন করে লেবাননে শুরু হওয়া হামলায় তিন হাজারেরও বেশি লেবানিজ জনগণের প্রাণহানি ঘটেছে। নির্বাচনি প্রচার চলাকালে ডোনাল্ড ট্রাম্প তিনি ক্ষমতায় আসার আগেই নেতানিয়াহু প্রশাসনকে গাজা থেকে সরে আসতে আহবান জানিয়েছেন। যুদ্ধাক্রান্ত পৃথিবীতে তাঁর এরূপ শাণিত বার্তা প্রাণিত করেছে বহু শান্তিকামী মানুষকে। তারপরও আমেরিকার পুরনো গৌরব ফিরিয়ে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ডোনাল্ড ট্রাম্প তার উত্তরসূরিদের পথেই হাঁটবেন কিনা তা নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে আছেন আরও অনেক দেশ এবং দেশের জনগণ।
শুরু থেকেই আমেরিকার অর্থনীতিকে চাঙা করা এবং দেশটির উপর থেকে অবৈধ অভিবাসনের চাপ কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছেন মার্কিন বিজনেস টাইকুন এবং হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। করোনা পরবর্তী বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দায় মার্কিন অর্থনীতি যখন ধুকছিল ঠিক তখনই রাশিয়া -ইউক্রেন যুদ্ধে জো বাইডেনের কিয়েভের প্রতি আর্থিক, রাজনৈতিক এবং কৌশলগত সমর্থন আমেরিকাকে শুধু বিতর্কিতই করেনি বরং আর্থিকভাবে ভীষণ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে মার্কিন অর্থনীতি।
মন্তব্য করুন