বলিউডের আলো ঝলমলে দুনিয়াতে আবারও বিচ্ছেদের কালো ছায়া। এবার, অস্কার জয়ী সংগীত পরিচালক এ আর রহমান ও তার স্ত্রী সায়রা বানু তাদের ২৯ বছরের বৈবাহিক সম্পর্কে যতি টানতে যাচ্ছেন। এই দম্পতির আইনজীবী মঙ্গলবার ভারতীয় গণমাধ্যমের কাছে এ খবর জানিয়েছেন।
১৯ নভেম্বর এই তারকা দম্পতির বিবাহ বিচ্ছেদের খবর প্রথম প্রকাশ করেন সায়রা বানুর আইনজীবী বন্দনা শাহ। এরপর এই তথ্য নিশ্চিত করেন এ আর রহমানও।
এ আর রহমান এবং সায়রা বানুর বিবাহ বিচ্ছেদের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করে আইনজীবী বন্দনা শাহ বলেছেন, ‘মানসিক চাপের’ কারণে আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারকা দম্পতি।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিবৃতিতে ডিভোর্স আইনজীবী বন্দনা শাহ জানান, এই দম্পতির পারস্পরিক সম্পর্কে চিড় ধরার পর তারা দুইজন মিলে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিনের বিবাহিত জীবন পেরিয়ে সায়রা ও তার জীবনসঙ্গী রহমান বিচ্ছেদের কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। তাদের সম্পর্কে বড় আকারে টানাপড়েন দেখা দেওয়ার পর তারা এই সিদ্ধান্ত নেন।
বন্দনা শাহ জানান, এ আর রহমান এবং সায়রা বানু, দু’জনের জন্যেই খুবই ‘কঠিন’ এবং ‘যন্ত্রণাদায়ক’ ছিলো এই পদক্ষেপ। সায়রা বানুর মানসিক যন্ত্রণার বিষয়টাও তুলে ধরেছেন ওই আইনজীবী।
তিনি আরও জানান, এই যুগলের মাঝে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। বহুবার চেষ্টা করা সত্ত্বেও দু’জনের কেউই এই দূরত্ব ঘোঁচাতে পারেননি, তাই তারা বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বন্দনা আরও বলেন, একে অপরকে পাগলের মতো ভালোবাসলেও তারা বুঝতে পেরেছেন, নানামুখী চাপ ও জটিলতা তাদের মধ্যে পর্বতসম ব্যবধান গড়ে তুলেছে।
উভয়ই মনে করেন আপাতত এই ব্যবধান ঘুচে যাওয়ার তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই। বিচ্ছেদের কথা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটা পোস্ট করেছেন এ আর রহমান।
সেখানে উল্লেখ করেছেন তাদের দাম্পত্য জীবন ৩০ বছর অতিক্রম করুক এই ইচ্ছা থাকলেও তা পূরণ হয়নি। বিচ্ছেদের পদক্ষেপ তার জন্য কতটা যন্ত্রণাদায়ক সে বিষয়েও জানিয়েছেন মি. রহমান।
সাম্প্রতিক কালে একাধিক ভারতীয় তারকার বিচ্ছেদের ঘটনা খবরের শিরোনামে এসেছে। কিন্তু এ আর রহমানের বিবাহ বিচ্ছেদের ঘোষণা সকলকেই বিস্মিত করেছে। কেন দীর্ঘ ২৯ বছর পর তারা বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিলেন সেই বিষয়ে বিস্তর আলোচনাও হচ্ছে।
১৯৯৫ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন এ আর রহমান (৫৭) ও সায়রা বানু। পরবর্তী বছরগুলোতে এই দম্পতির ঘর আলো করে দুই কন্যা খাতিজা ও রাহিমা এবং পুত্র সন্তান আমিন জন্ম নেয়।
ইনস্টাগ্রাম স্টোরিসে আমিন লেখেন, আমি সবাইকে অনুরোধ করবো এই (কষ্টকর) সময়ে আমাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার প্রতি সম্মান জানাতে। বিষয়টি বুঝতে পারার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।
এক যৌথ বিবৃতিতে রহমান দম্পতি জানান, ‘ব্যথা ও যাতনা’ থেকে তারা আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তারা জনসাধারণকে তাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার প্রতি সম্মান জানাতে ও সার্বিকভাবে দায়িত্বশীল আচরণ করার অনুরোধ জানিয়েছেন, যাতে তারা তাদের জীবনের এই ‘কঠিন সময়’ পার হতে পারেন।
সায়রা বানু প্রথম আলাদা করে ডিভোর্স নিয়ে একটি বিবৃতি দেন। এরপর আসে দম্পতির যৌথ বিবৃতি।
এ আরও রহমান তার এক্স হ্যান্ডলে বলেন, আমরা ৩০ বছরের মাইলফলক ছোঁয়ার আশা করেছিলাম। তবে বোঝা গেছে, সব কিছুরই এমন পরিণতি হতে পারে যা আপনি আগে থেকে বুঝতে পারবেন না। ভগ্নহৃদয়ের বেদনার ভারে এমন কী খোদার আরশও টলে যেতে পারে। তারপরও, এই ভঙ্গুর পরিস্থিতিতে, সব কিছুর অর্থ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছি। যদিও ভেঙে যাওয়া সম্পর্কের টুকরোগুলো আর আগের জায়গা ফিরে পেতে নাও পারে। আমাদের বন্ধুদের বলছি। আমাদের জীবনের এই ভঙ্গুর অধ্যায়ে মহানুভবতা ও আমাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার প্রতি সম্মান জানানোয় আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।
মন্তব্য করুন