ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় বসতে আগ্রহী রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে এ ক্ষেত্রে কিছু শর্ত রয়েছে তার।
গত ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিশাল ব্যবধানে জয়ী হবার পর থেকেই ট্রাম্প বরাবরই বলে তিনি রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করবেন।
দুই দেশের মধ্যে চলমান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচুর অর্থ ব্যয়ের কঠোর সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। তিনি এই জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ভূমিকারও সমালোচনা করেছেন।
ট্রাম্প বলেছেন, আমি বিশ্বকে শান্তিতে রাখতে চাই, যুদ্ধ চাইনা। নির্বাচনী প্রচারণাকালে ট্রাম্প একাধিকবার বলেছেন নির্বাচিত হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাবেন।
এদিকে এবার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, যুদ্ধ বন্ধে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ট্রাম্পের সঙ্গে বসতে চান।
রাশিয়ার সাবেক ও বর্তমান পাঁচ কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে স্কাই নিউজসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম জানিয়েছে, যুদ্ধ বন্ধে শর্তসাপেক্ষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বসতে চান রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। এরমধ্যে রয়েছে, রাশিয়ার দখলে নেয়া ইউক্রেনের ভূ-খণ্ডগুলো ছাড় না দেয়া এবং কিয়েভ যাতে ন্যাটোতে যোগ দিতে না পারে।
ওই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় কোনো চুক্তি হলে ইউক্রেনে চলমান সম্মুখ সারির যুদ্ধ বন্ধে রাজি হতে পারেন পুতিন। ইউক্রেনের কাছ থেকে দখলে নেয়া চারটি অঞ্চলকে নিজেদের দাবি করছে রাশিয়া। ওইসব অঞ্চল থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করতেও রাজি ক্রেমলিন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনকে দুরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে যুদ্ধের পরিস্থিতি অনেকটাই পাল্টে দিয়েছেন। এই রকম পরিস্থিতিতে শেষ পর্যন্ত কোনো চুক্তি না হলে রাশিয়া যুদ্ধ চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে রুশ বার্তা সংস্থা ‘তাস’।
তবে পাঁচ কর্মকর্তা বলেছেন, ইউক্রেনকে ঘিরে পশ্চিমাদের ‘নির্মম সত্য’ মেনে নিতে হবে। সেটি হচ্ছে, ইউক্রেনকে অকুণ্ঠ সমর্থনের পরও তারা চলমান এই যুদ্ধে রাশিয়ার বিজয় ঠেকাতে পারবেনা।
ইউক্রেনের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে খারকিভ ও মিকোলাইভের অল্প যেসব এলাকা রাশিয়ার দখলে রয়েছে, সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহারে রাজি হতে পারে ক্রেমলিন। চলতি মাসেই পুতিন বলেছিলেন, যদি কোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়, তাহলে তা যুদ্ধক্ষেত্রে বাস্তবতার নিরিখেই হবে। তিনি এ আশঙ্কাও প্রকাশ করেছিলেন যে স্বল্প সময়ের জন্য যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলে এ সময়টাকে ইউক্রেনের সামরিক শক্তি বাড়ানোর কাজে লাগাতে পারে পশ্চিমারা।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ায় হামলা চালাতে ইউক্রেনকে অনুমতি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। দেশটির এই পদক্ষেপের কারণে যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে পৌঁছাতে জটিলতা ও বিলম্ব দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছে সূত্র।
মন্তব্য করুন