আজ ৯ ডিসেম্বর রোকেয়া দিবস। পিতৃতান্ত্রিক আর আধিপত্যবাদী সমাজে মেয়েদের মাথা তুলে দাঁড়ানোর অধিকার ছিলোনা।কিন্তু এই সমাজে মেয়েরাও নিজের অধিকারের কথা বলবে স্বপ্ন দেখবে, নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবে ‘সুলতানার স্বপ্ন’ গ্রন্থে এমন স্বপ্ন দেখেছিলেন নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। নারীকে স্বপ্নের পথে হাটতে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন বেগম রোকেয়া।
দিবসটি উপলক্ষে গতকাল রোববার রাজধানীর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে আয়োজিত ‘সুলতানার স্বপ্ন’ পাঠ উদযাপন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বক্তারা। অনুষ্ঠানে সুলতানার স্বপ্ন অডিওবুক উদ্বোধন করা হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ও সদস্য সচিব সারা যাকের। তিনি বলেন, নারীর অন্তর্নিহিত শক্তিকে স্বীকৃতি দিয়েছেন বেগম রোকেয়া। তিনি স্বপ্ন দেখতেন নারীরা একদিন শিক্ষা ও বিজ্ঞানের আলোয় উন্মুক্ত হবে। পুরুষ যা যা করে , নারীও ঠিক তাই তাই করবে। নারীরা তাদের মেধা ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে যোগ্য অবস্থানে পৌঁছাবে। উপমহাদেশও তার পরে নারী মুক্তির সমার্থক হয়ে ওঠেন রোকেয়া সাখাওয়াত্ হোসেন ও সুলতানার স্বপ্ন। বাঙালি মুসলিম শিক্ষায় পথিকৃৎ হিসেবে রোকেয়া নারীদের শিক্ষায় এগিয়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপট তৈরি করেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী।
১৯০৫ সালে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন রচিত ‘সুলতানার স্বপ্ন’ প্রকাশিত হয়। এ বছর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রস্তাবনায় ইউনেস্কোর মেমোরি অফ দ্য ওয়ার্ল্ড এশিয়া-প্যাসিফিক রেজিস্টারে স্বীকৃতি পেয়েছে সুলতানার স্বপ্ন। এই স্বীকৃতি উদযাপনের জন্য ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন গণগ্রন্থাগারের সহযোগিতা ও সম্পৃক্ততায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর বিশেষ পাঠ উদযাপন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে এই কর্মসূচিতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউনেস্কোর প্রতিনিধি ও অফিস প্রধান সুজান ভাইজ। অনুষ্ঠানে সুলতানার স্বপ্ন থেকে বাংলায় পাঠ করেন অভিনেত্রী ত্রপা মজুমদার ও ইংরেজিতে পাঠ করেন ওয়ার্দা আশরাফ।
বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের জন্ম ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুর জেলার পায়রাবন্দ গ্রামে এক অভিজাত পরিবারে। এই দিনেই ১৯৩২ সালে তার জীবনাবসান হয়।
রোকেয়া দিবস উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার বাণীতে বলেন, বেগম রোকেয়ার কর্ম ও জীবনাদর্শের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে সকলকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশের নারীরা এগিয়ে যাবে কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনের পথে-বেগম রোকেয়া দিবসে আমি এ প্রত্যাশা করি।
প্রধান উপদেষ্টা তার বাণীতে বলেন, আমি আশা করি বেগম রোকেয়ার মতো নারীরা নিজ নিজ অবস্থানে থেকে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত নির্যাতিত ও অসহায় নারীদের অবস্থা ও অবস্থান উন্নয়নে কাজ করে বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবে।
মন্তব্য করুন